সোমবার, ৮ মে, ২০১৭

কেউ যদি কোন নারীকে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয় তখন সেই নারীর উপর আত্মরক্ষা করা কি ? আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করা জায়েয হবে কি? ধর্মীয় ও দেশীয় আইন কি বলে ?

বর্তমানে বাংলাদেশে  ধর্ষণের পরিমাণ অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে । ফেসবুক কিংবা সংবাদ মাধ্যম গুলোতে  প্রতিদিন ১০ বা তার অধিক ধর্ষণের ঘটনা দেখা যায় । ছোট বাচ্ছা থেকে শুরু করে ৪০-৫০ বছরের বয়স্ক মহিলা ও এই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না । অনেক মা বোনরা ধর্ষিত হওয়ার পরে ও মান সম্মান হারানোর ভয়ে চুপ থাকে,  তাদের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করে যায়। আবার কেউ কেউ ইজ্জত হারানোর পর লজ্জায় বা বিচার না পেয়ে নীরবে আন্তহত্যার পথ বেছে নেয় ।


অথচ একটা নারী একটু সাহসী হলে এই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে । কারণ এই ব্যাপারে ইসলাম ও বাংলাদেশের আইন ধর্ষণকারীকে হত্য করার অনুমতি দিয়েছে । শুধু তাই নয় ধর্ষকের হাতে যদি ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ক্ষুণ হয় তাহলে সে শহীদের মর্যাদা পাবে ।

দেশের আইনানুসারে ধর্ষককে ক্ষুণ করার শাস্তি ঃ
বাংলাদেশে দন্ডবিধির ধারা ১০০ অনুযায়ী কেউ আত্মরক্ষার্থে খুন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
.
ধারাটি তখনই প্রয়োগ করা যাবে–
.
১) যদি কোন লোক আপনার উপর এমন আঘাত করতে উদ্ধ্যত হয় যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই আপনার এরূপ আশংকার সৃষ্টি হয় যে, আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করে সে আঘাতকে প্রতিহত না করলে আপনার মৃত্যু অনিবার্য।
.
২) যদি কোন লোক আপনাকে এমন আঘাত বা আক্রমণ করে যার ফলে ন্যায় সঙ্গতভাবেই এরূপ আশাংকার সৃষ্টি হয় যে, সে আঘাত বা আক্রমণের ফলে আপনার গুরুতর আহত হওয়া অনিবার্য।
.
৩) আপনি যদি স্ত্রীলোক হন এবং আপনাকে যদি কেউ ধর্ষণ করতে আসে। (অর্থাৎ স্ত্রীলোক তার ইজ্জত রক্ষার্থে ধর্ষণে উদ্ধত লোকের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারেন।)
.
৪) যদি কেউ কোন অস্বাভাবিক কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
.
৫) যদি কোন লোক কোন শিশু বা নারীকে অপহরণের উদ্দেশ্যে আঘাত বা হামলা করে।
.
৬) যদি আপনাকে কেউ বেআইনীভাবে আটক করতে উদ্যত হয় এমন পরিস্থিতিতে আপনার ন্যায়সঙ্গতভাবে আশংকা হয় যে, আপনি আটক হলে সরাসরি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আপনি আর উদ্ধার হতে পারবেন না, তখন আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যাবে।
.
তবে আইন এও বলেছে (দঃ বিঃ ৯৯ ধারায়) আত্মরক্ষার জন্য যতদুর পর্যন্ত ক্ষতিসাধন করা প্রয়োজন তার বেশী ক্ষতি সাধন করা যাবে না।

ইসলাম ধর্মানুসারে একজন ধর্ষকের শাস্তি ঃ

যে নারীর সাথে জোরপূর্বক যেনা করার চেষ্টা করা হচ্ছে সে নারীর উপর আত্মরক্ষা করা ফরজ। তিনি
কিছুতেই দুর্বৃত্তের কাছে হার মানবেন না। এজন্য যদি দুর্বৃত্তকে হত্যা করে নিজেকে বাঁচাতে হয় সেটা
করবেন। এই আত্মরক্ষা ফরজ। ধর্ষণ করতে উদ্যত ব্যক্তিকে হত্যা করার কারণে তিনি দায়ী হবেন না। এর সপক্ষে দলিল হচ্ছে- ইমাম আহমাদ ও ইবনে হিব্বান কর্তৃক সংকলিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস,

 “যে ব্যক্তি তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার জীবন রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার ধর্ম রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ। যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ।”
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় এসেছে- 
“যে ব্যক্তি তার পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল সে শহীদ” অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী অথবা অন্য কোন নিকটাত্মীয় নারীর ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেল (সে শহীদ)। যদি স্ত্রীর ইজ্জত রক্ষা করার জন্য লড়াই করা ও ধর্ষকের হাত থেকে স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হওয়া স্বামীর জন্য বৈধ হয় তাহলে কোন নারী নিজের ইজ্জত নিজে রক্ষা করার জন্য প্রাণান্তকর লড়াই করা; এই ধর্ষক, জালিম ও দুর্বৃত্তের হাতে নিজেকে তুলে না দিয়ে নিহত হওয়া সে নারীর জন্য বৈধ হওয়া অধিক যুক্তিপূর্ণ। কেননা তিনি যদি নিহত হন তাহলে তিনি শহীদ। যেমনিভাবে কোন নারীর স্বামী তার স্ত্রীর ইজ্জত রক্ষা করতে গিয়ে যদি নিহত হন তিনি শহীদ। শহীদি মৃত্যুর মর্যাদা অনেক বড়। আল্লাহর আনুগত্যের পথে, তাঁর পছন্দনীয় পথে মারা না গেলে এ মর্যাদা লাভ করা যায় না। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তাআলা এ ধরনের প্রতিরোধকে তথা কোন ব্যক্তির তার স্ত্রীর ইজ্জত রক্ষার জন্য লড়াই করাকে এবং কোন নারীর তার নিজের ইজ্জত রক্ষার জন্য লড়াই করাকে পছন্দ করেন। আর যদি কোন নারী আত্মরক্ষা করতে সমর্থ্ না হন, পাপিষ্ঠ ও দুশ্চরিত্র লোকটি যদি তাকে পরাস্ত করে তার সাথে যেনাতে লিপ্ত হয় তাহলে এ নারীর উপর হদ্দ (যেনার দণ্ড) অথবা এর চেয়ে লঘু কোন শাস্তি কার্যকর
করা হবে না। 
কারণ হদ্দ কায়েম করা হয় সীমালঙ্ঘনকারী, পাপী ও দুশ্চরিত্র ব্যক্তির উপর।
ইবনে কুদামা হাম্বলির “মুগনী” নামক গ্রন্থে এসেছে-
যে নারীকে কোন পুরুষ ভোগ করতে উদ্যত হয়েছে ইমাম আহমাদ এমন নারীর ব্যাপারে বলেন:
আত্মরক্ষা করতে গিয়ে সে নারী যদি তাকে মেরে ফেলে... ইমাম আহমাদ বলেন: যদি সে নারী জানতে
পারেন যে, এ ব্যক্তি তাকে উপভোগ করতে চাচ্ছে এবং আত্মরক্ষার্থে তিনি তাকে মেরে ফেলেন তাহলে সে নারীর উপর কোন দায় আসবে না। 

এ প্রসঙ্গে ইমাম আহমাদ একটি হাদিস উল্লেখ করেন যে হাদিসটি যুহরি বর্ণনা করেছেন কাসেম বিন মুহাম্মদ থেকে তিনি উবাইদ বিন উমাইর থেকে। তাতে রয়েছে- 
এক ব্যক্তি হুযাইল গোত্রের কিছু লোককে মেহমান হিসেবে গ্রহণ করল। সে ব্যক্তি মেহমানদের মধ্য থেকে এক মহিলাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছিল। তখন সে মহিলা তাকে পাথর ছুড়ে মারেন। যার ফলে লোকটি মারা যায়। 
সে মহিলার ব্যাপারে উমর (রাঃ) বলেন: 
আল্লাহর শপথ, কখনই পরিশোধ করা হবে না অর্থাৎ কখনোই এই নারীর পক্ষ থেকে দিয়ত (রক্তমূল্য) পরিশোধ করা হবে না। কারণ যদি সম্পদ রক্ষার্থে লড়াই করা জায়েয হয় যে সম্পদ খরচ করা, ব্যবহার করা জায়েয তাহলে কোন নারীর তার আত্মরক্ষার্থে, খারাপ কাজ থেকে নিজেকে হেফাযত
করতে গিয়ে, যেনা থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে- যে গুনাহ কোন অবস্থায় বৈধ নয়- লড়াই করা সম্পদ রক্ষার লড়াই এর চেয়ে অধিক যুক্তিপূর্ণ। এইটুকু যখন সাব্যস্ত হল সুতরাং সে নারীর যদি আত্মরক্ষা করার সামর্থ্য থাকে তাহলে সেটা করা তার উপর ওয়াজিব। কেননা দুর্বৃত্তকে সুযোগ দেয়া হারাম। এক্ষেত্রে আত্মরক্ষা না করাটাই তো সুযোগ দেয়া।[আল-মুগনি (৮/৩৩১)] 
আল্লাহ ভাল জানেন।[আল-মুফাসসাল ফি আহকামিল মারআ (৫/৪২-৪৩)] 
ইবনুল কাইয়্যেম তাঁর “আত-তুরুকুল হুকমিয়্যা” গ্রন্থে বলেন: ১৮- (পরিচ্ছেদ) উমর (রাঃ) এর নিকট এক মহিলাকে আনা হল যে মহিলা যেনা করেছে। তিনি তাকে জিজ্ঞসাবাদ করলেন: মহিলাটি দোষ স্বীকার করল। উমর (রাঃ) তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। তখন
আলী (রাঃ) বললেন: এ নারীর কোন ওজর থাকতে পারে। এ কথা শুনে উমর (রাঃ) মহিলাটিকে বললেন: কেন তুমি যেনা করেছ? মহিলাটি বলল: আমি এক লোকের সাথে একত্রে পশু চরাতাম। তার উটপালে পানি ও দুধ ছিল। আমার উটপালে পানি ও দুধ ছিল না। আমি পিপাসার্ত হয়ে তার কাছে পানি চাইলাম। সে অস্বীকার করে বলল- আমি আমাকে ভোগ করতে দিলে সে পানি দিবে। আমি (তার
প্রস্তাব) তিনবার অস্বীকার করলাম। এরপর আমি এত তীব্র পিপাসা অনুভব করলাম যেন আমার প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাবে। তখন আমি সে যা চায় তাকে তা দিলাম। বিনিময়ে সে আমাকে পানি পান করাল। 
তখন আলী (রাঃ) বললেন: আল্লাহু আকবার (আল্লাহ মহান)।
ﻓَﻤَﻦْ ﺍُﺿْﻄُﺮَّ ﻏَﻴْﺮَ ﺑَﺎﻍٍ ﻭَﻻ ﻋَﺎﺩٍ ﻓَﻼ ﺇﺛْﻢَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ، ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَﺣِﻴﻢٌ
(অর্থ- অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।)[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৭৩]
সুনানে বাইহাকীতে এসেছে- আবু আব্দুর রহমান আল- সুলামি হতে বর্ণিত তিনি বলেন: উমর (রাঃ) এর নিকট এক মহিলাকে ধরে আনা হল। সে মহিলা তীব্র পিপাসায় কাতর ছিল এবং এক রাখালের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। মহিলাটি রাখালের কাছে পানি চাইল। রাখাল তাকে পানি দিতে অস্বীকৃতি জানাল-
যদি না মহিলা রাখালকে জৈবিক চাহিদা পূরণ করার সুযোগ না দেয়। উমর (রাঃ) এ মহিলাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যার ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করলেন।
তখন আলী (রাঃ) বললেন: এ মহিলা অনন্যোপায় ছিল। আমার অভিমত হল- তাকে খালাস দিন। তখন উমর (রাঃ) মহিলাটিকে খালাস দিলেন। আমি বলব: এই বিধান এখনো চলমান আছে। যদি কোন নারী কোন পুরুষের কাছে থাকা খাবার বা পানীয়ের তীব্র প্রয়োজনের সম্মুখীন হয় এবং সে পুরুষ যেনা করা ছাড়া সেটা দিতে রাজি না হয়, আর সে নারী স্বীয় জীবন নাশের আশংকা করে নিজেকে সে পুরুষের হাতে তুলে দেয় সেক্ষেত্রে সে নারীর উপর শরয়ি হদ্দ (যেনার দণ্ড) কায়েম করা হবে না। কেউ যদি বলেন: এমতাবস্থায় নিজেকে তুলে দেয়া কি জায়েয; নাকি মৃত্যু হলেও ধৈর্য রাখা ওয়াজিব? 

উত্তর হচ্ছে: এই নারীর ক্ষেত্রে শরয়ি হুকুম হচ্ছে- জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার নারীর হুকুম।
যে নারীকে এই বলে হুমকি দেয়া হয়: ‘সুযোগ দিলে দে; না হয় তোকে মেরে ফেলব’। ধর্ষণের শিকার
নারীর উপর হদ্দ কায়েম করা হবে না। মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য সে নারী নিজের ইজ্জত বিসর্জন দিতে পারে। তবে যদি কোন নারী ধৈর্যধারণ করে মৃত্যুকে বরণ করে নেয় তবে সেটা তার জন্য উত্তম। কিন্তু
এক্ষেত্রে ধৈর্য ধরা তার উপর ফরজ নয়।
আল্লাহই ভাল জানেন।

বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭

পতাকা কি আমাদের কাছে স্বাধীনতার প্রতীক ? না একটা রঙিন কাপড় আর দর্জির মজুরী ?

হেটার্সরা বলবে এটাই ভালবাসা আর আমি বলি কি এটাই শো-অফ
আজ নাকি জাতীয় পতাকা দিবস। ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ ২ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল।
যদিও দিবসের নামে উৎসব বা পুজা করা আমি পছন্দ করি না। তারপর ও আজকে জাতীয় পতাকার যথাতথা ব্যবহার দেখে কিছু লিখতে ইচ্ছে হল।
সাধারণত আমাদের দেশে জাতীয় পতাকার ব্যবহার দেখলে মনে হয় এটাকে কাপড় ও তার মজুরীর মুল্য দিয়ে মুল্যায়ন করা হয়। জাতীয় পতাকা কোন রঙীন কাপড়ের টুকরো নয়, এটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক। আর জাতীয় পতাকা ইদানিং শো অফ করার জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়। আবার কিছু ব্যবসায়ী এই পতাকা নিয়ে ও ব্যবসা করে ।
একটা জরীপে দেখা গেছে, বর্তমানে  ফেসবুকে ছবি তোলার ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকার কদর সবচেয়ে বেশি। তারপরে বিভিন্ন দিবস উৎযাপনে এর ক্ষেত্রে ও এর ব্যবহার যথেষ্ট।
এরপর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকার নিয়মিত ব্যবহার দেখা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে স্কুল, কলেজ বা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ নিয়মে (দেশীয় আইনে) পতাকা উত্তোলন বা নিমজ্জন করলে ও আম জনতা যারা বিশেষ দিবসে বা বিশেষ উপলক্ষে বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পতাকা বহন করে, তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় নির্দিষ্ট দিনের পরে বা ফেসবুকে ছবি তোলার পরে তার কাছে পতাকার আর মুল্য থাকে না। এমনকি বেশিরভাগ লোক পতাকার ব্যবহার ও জানে না, কখন উঠাতে হবে? কখন নামাতে হবে? কখন বা অর্ধ নিমজ্জিত রাখতে হবে?
পতাকা কি পায়ের নিচে গেলে কি অপরাধ, পতাকার উপর বসলে কি অপরাধ বা পতাকার উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা কতটুকু জায়েয ?
আমাদের কিছু কিছু সাইক্লিস্ট বা ট্রাভেলার ভাইদের মাঝে ও দেখি একই অবস্থা। রাইডে বা ট্যুরে পতাকা নিয়ে যাই ঠিকই, কিন্তু পতাকার মুল্য ওই ছবি তোলা পর্যন্ত। তারপরে পতাকা কই? সে কই? পতাকা কি ব্যাগে না মাটিতে কোন খবর থাকে না।
নোট: ইদানিং পতাকা নিয়ে শো অফ করার রোগ আমাকে ও পাইছে। আমি আগে রাইডে বা ট্যুরে পতাকা বা প্লেকার্ড কিছুই নিতাম না। কিন্তু ইদানিং গত ২-৩ টা ট্যুরে পতাকা নিয়ে যাই শো-অফ করার জন্য। আজকাল শো-অফ না করলেও ট্রাবলার হওয়া যায় না। তবে আমি পতাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করি, যেমনটা একটা চকলেট বা বিস্কুট খেয়ে তার প্যাকেট টা পর্যাপ্ত জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করি।
অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন বাইরের উন্নত দেশগুলোতে পতাকা দিয়ে অন্তর্বাস তৈরি করা হয়?
 তাহলে আমাদের দেশে পতাকা যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করলে আপনার সমস্যা কি?

 জি আপনি ঠিক উন্নত দেশ যেমন আমেরিকা, ইংল্যান্ড এসব দেশে জাতীয় পতাকা দিয়ে অন্তর্বাস, মৌজা আর ও কত কি তৈরি হয়। কিন্তু তাদের দেশের আইন আর আমাদের দেশের আইন এক না।

আপনাকে আমাদের দেশের পতাকা ব্যবহার করতে হলে আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে, আপনি আমেরিকার আইন মেনে আমাদের দেশের পতাকা বহন করতে পারবেন না।
ইহার ব্যবহার বিধি জানা অতীব জরুরী ।

জাতীয় পতাকার ম্যাপ ও ব্যবহারঃ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশের সরকারী ও বেসরকারী ভবনে ব্যবহারের জন্য ৩ ধরনের মাপ রয়েছে।
দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং প্রস্থ ৬ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২ ফুট।
দৈর্ঘ্য ৫ ফুট এবং প্রস্থ ৩ ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ১ ফুট।
দৈর্ঘ্য ২.৫ ফুট এবং প্রস্থ ১.৫ ফুট, লাল বৃত্তের বসার্ধ হবে ১/২ ফুট।
এছাড়া সরকারি পরিবহনে ব্যবহারের জন্য দুই ধরনের মাপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
দৈর্ঘ্য ১৫ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৯ ইঞ্চি, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ৩ ইঞ্চি।
দৈর্ঘ্য ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থে ৬ ইঞ্চি, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ ২ ইঞ্চি।
আর আন্তর্জাতিক এবং দ্বি-পাক্ষিক অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য টেবিল পতাকার মাপ ১০:৬ ইঞ্চি।

ব্যবহারে আইনত  বিধি-নিষেধঃ

জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০)-এ জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিভিন্ন বিধি-বিধান বর্ণিত হয়েছে। তার অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান না জানলেই নয়:
১। জাতীয়ভাবে অনুমোদিত মাপ অনুযায়ী সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা তৈরি করতে হবে।
জাতীয় পতাকা দিয়ে কাপড় পড়া অবৈধ
২।  মিছিলে পতাকা বহনের বিধান হচ্ছে, পতাকা মিছিলের কেন্দ্রে অথবা মিছিলের অগ্রগমন পথের ডান দিকে বহন করতে হবে।
৩। জাতীয় পতাকার ওপর কোনো কিছু লেখা বা মুদ্রিত করা যাবে না অথবা কোনো অনুষ্ঠান বা উপলক্ষে কোনো চিহ্ন অঙ্কন করা যাবে না;
৪। এমনকি জাতীয় পতাকাকে পোশাক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না এবং গায়ে জড়িয়ে রাখা যাবে না। তবে পূর্ণ সামরিক মর্যাদা বা পূর্ণ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যক্তিকে সমাধিস্থ করা হলে তাঁর শবযাত্রায় জাতীয় পতাকা আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫। কোনো অবস্থায়ই পতাকা নিচে অবস্থিত কোনো বস্তু যেমন—মেঝে, পানি ও পণ্যদ্রব্য স্পর্শ করবে না এবং কবরের ওপরে স্থাপন করার সময় পতাকাটি কবরে নামানো যাবে না কিংবা মাটি স্পর্শ করবে না। 
পার্কে হাওয়া খাইতে খাইতে এভাবে পতাকার উপর বসা যাবে না

৬। জাতীয় পতাকা কোনো অবস্থায়ই সমতল বা সমান্তরালভাবে বহন করা যাবে না এবং উত্তোলনের সময় সুষ্ঠু ও দ্রুতলয়ে উত্তোলন করতে হবে এবং সসম্মানে অবনমিত করতে হবে।
৭। পতাকার অবস্থা ব্যবহারযোগ্য না হলে তা মর্যাদাপূর্ণভাবে সমাধিস্থ করতে হবে।

৮। কোনো অবস্থাতেই জাতীয় পতাকা পরিবহনের সামনে চিত করে রাখা যাবে না বা পিছনে উত্তোলন করা যাবে না।


সামনে এভাবে পতাকা বাধা যাবে না আর পিছনে উড়ানো যাবে না

৯। সরকার কর্তৃক অনুমোদিত স্থাপনাগুলোতে সূর্য উদয় ও সূর্য অস্ত যাওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় পতাকা উড্ডীন রাখা যাবে।

১০। জাতীয় বিভিন্ন দিবসে সরকারী, বেসরকারী, বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও কনসুলেটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে।
১১। শোক দিবস সমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে জাতীয় পতাকা পুরোপুরি উত্তোলন করে তারপর অর্ধনমিত অবস্থায় নামিয়ে আনতে হবে। আর দিনের শেষে জাতীয় পতাকা নামানোর সময় প্রথমে অর্ধনমিত অবস্থা থেকে পুরোটা উত্তোলন করে তারপর নামিয়ে আনতে হবে।
১২। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ব্যতীত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা যাবে না।
১৩। ব্যবসা-বাণিজ্য বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকাকে প্রতীক হিসাবে ব্যবহারের আগে সরকারের নিকট থেকে লিখিত অনুমতি সংগ্রহ করতে হবে।

যাদের বাসভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়ঃ

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় সংসদের স্পিকার, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
প্রধান বিচারপতি, চীফ হুইপ
বিরোধী দলীয় নেতা
পূর্ণ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি
বিদেশে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন
পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান


পরিবহনে যারা জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে পারবেনঃ

রাষ্ট্রপতি , প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
প্রধান বিচারপতি, চীফ হুইপ, বিরোধী দলীয় নেতা, পূর্ণ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি
বিদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের কূটনীতিকগণ

জাতীয় পতাকা অবমাননার শাস্তিঃ

জাতীয় পতাকার অবমাননা কোনোভাবেই করা উচিত নয়। যদি কেউ জাতীয় পতাকার অবমাননা করে তাহলে তাকে জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০) মোতাবেক সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

জাতীয় পতাকা ব্যবহারের সরকারি সঠিক নিয়ম জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন ।

সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

আসলে জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় কি? উৎসব কি ? কেন আমরা সব কিছুকে ঝগা খিচুড়ি বানায়

সকাল বেলা ওয়াইফাই অন করতে একটা ইনবক্স দেখে আমার চুলকানি বেড়ে গেল
তাই চুলকানির মলম হিসেবে বাধ্য হয়ে লিখতে বসলাম
আপু ঃ শুভ বসন্ত ভাইয়া
আমিঃ আপনে ক্যাডা ?
আপুঃ অনেকক্ষণ চুপ ছিল (মনে মনে হয়ত ভাবছে পার্ট মারতেছি)
যাইহোক ৫ মিনিট পরে উত্তর দিল এটা কি ধরণের প্রশ্ন
আপনি আমাকে চিনেন না ?
আমিঃ হ্যা চিনি, চিনব না কেন ।
আপুঃ তাহলে
আমিঃ জানতে চাইলাম আপনি বাঙালী না বাংলাদেশী, না বাংলিশ, না উৎসবভোজী ?
আপুঃ বুঝি নাই
আমিঃ মানে আপনি মুসলিম না হিন্দু, বৌদ্ধ বা খৃষ্টান ?
আপুঃ আর এ ভাই এসব কি লিখেন , আমি (......) এবং বাঙালী সেটা আপনি ভাল করে জানেন, তাহলে এত প্রশ্ন কেন ?
আমিঃ না ইনবক্স চেক করে দেখলাম, প্রতিটি উৎসবে আপনি আমাকে উইশ করেছেন , আপনার উৎসব কয়টা? ( ১লা বৈশাখ, শুভ জন্মদিন, ২ ঈদ, দিওয়ালী, ক্রিসমাস, থার্টিফাস্টনাইট, ২ টা নিউ ইয়ার, মিলাদুন্নবী, রোজ ডে, শুভ বসন্ত এমনকি কোন উৎসব বাদ যায় নি।
কিন্তু আমি জানতে চাই আসলে আপনি কি ঝগা খিচুড়ি উৎসব পালন করেন, না সবদিনই আপনার কাছে উৎসব ?
আপু ঃ সীন ......... কিন্তু চুপ
আমিঃ আর যেভাবে উইশ করা শুরু করেছেন কাল ভালবাসা দিবসে না আবার শুভ ভালবাসা দিবস কইয়া ইনবক্স করেন সেই ভয়ে আছি।
আপুঃ............
আপুঃ ...............
আমিঃ শুনেন আমি একটা দিবস নিয়ে খুব ভয়ে থাকি তাই নতুন করে আর কোন দিবস আমার মাথায় ঢুকে না, সেটা হচ্ছে হাশরের দিবস, ঐ দিবসে আমার কি হবে ?
আমি কি করিব ?
আমার প্রতিটা কর্ম বা কদমের হিসাব দিতে হবে, আপনি যে আমাকে এত খিচুড়ি ডে এর উইশ করেন সেটার জন্য ও দিতে হবে।
এসব আমাকে সবসময় ভাবিয়ে তোলে, তাই দয়া করে আর কোন দিবসের উইশ করবেন না ।
আপু ঃ ......।
আপুঃ চুপ, তুই একটা বেয়াদপ, আনস্মার্ট, গ্রাম্যকেত, মেয়েদের সম্মান দিতে জানস না (৫ মিনিট পর যা লিখল )
আপুঃ তুই বেইয়াদপরে যে কেন এতদিন আমার লিস্টে রাখছি
আমিঃ উওর দিতে গিয়ে দেখলাম, আমি ব্লক ।
জাতির কাছে এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে
আপনি মুসলিম হলে আপনার উৎসব ২ ঈদ, (অন্য ধর্মের হলে দুর্গাপুজা, কঠিন চীবরদান বা ক্রিস্টমাস)
বাংলাদেশি হলে ২১ শে ফেব্রুয়ারী বা ১৬ ই ডিসেম্বর
বাঙালী হলে ১লা বৈশাখ বা ফ্লগুন বুঝলাম ।
কিন্ত এতো তারিখে অমুক ডে। তেতো তারিখ তমুক ডে। সেতো তারিখ সমুক ডে। আহা! কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।
কিভাবে আপনি ১লা বৈশাখ বা বসন্ত পালন করে আবার থার্টিফাস্ট নাইট বা হ্যাপি নিউ ইয়ার বা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন ?
কিভাবে আপনি ঘুড়ি ও নৌকা বাইচ উৎসব পালন করে , রোজ ডে, হাগ ডে, কিস ডে এবং সর্বোপরি বিছানা ডে পালন করেন ?
কিভাবে আপনি ২ ঈদ পালন করে আবার দুর্গাপুজা, ক্রিস্টমাস বা হ্যালুইন উৎসব পালন করেন
আপনার বা আপনাদের ভাবটা যদি এরকম হয় তাহলে আমি কি বুঝে নিব জাতি হিসেবে আপনি শংকর ?
আসলে ডে , ফে কিছু না আপনি একজন উৎসবভোজী, বিভিন্ন ডে উপলক্ষে বিভিন্ন ছেলে বা মেয়েদের একসাথে ল্যাঠানো বা ঘুরাটাই আপনার নেশা,
এসব ডে মদ, গাজা, বাবা ও বিভিন্ন ককটেল পার্টির একটা উপলক্ষ্য মাত্র ।
আপনি যেটাকে আজ বসন্ত মনে করে হলুদ সাজ নিচ্ছেন জানেন স্বৈরাচার এরশাদ এর আমলে ১৩ ও ১৪ ই ফেব্রুয়ারী রক্তাক্ত ও বিষাদময় দিন ছিল । ১৯৮৩ সালের এই দিনে স্বৈরাচারী এরশাদ হত্যা করেছিল জাফর, জয়নাল আর দিপালী সাহাদের। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৫ সালের এই দিনে শহীদ হয়েছিলেন রউফুন বসুনিয়া। এ দেশে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে ১৪ই ফেব্রুয়ারী দ্রোহ প্রতিরোধ আর রক্তাত্ব দিন। মনে রাখা ভালো- বসুনিয়া ছিলেন জাতীয় ছাত্রলীগের নেতা, জাফর-জয়নাল ছিলেন মুজিববাদী ছাত্রলীগ নেতা, আর দিপালী সাহা ছিলো একটি শিশু ।
শুধু হুজুগে এবং হয়ে এই ডে সেই ডে না করে এবং নিজের রুপ পরিবর্তন না করে, মনযোগ দিয়ে কাজ করেন, ডে এর পিছনে না ছুটে কাজের পিছনে ছুটুন।

বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

ইজতেমায় নামাজ পড়া নাকি মক্কা মদিনাতে নামাজ পড়া থেকে উত্তম । ইজতেমায় জমজমাট করার জন্য তাবলিগের নতুন কৌশল

তাবলিগীদের টঙ্গীর ইজতেমায় ১ রাকাত নামাজ পড়লে উনপঞ্চাশ কোটি রাকআতের সাওয়াব, অথচ ১ রাকাত মদিনায় পড়লে ৫০ হাজার আর মক্কায় পড়লে ১ লাখ (!!!!!!)
...................
অাসতাগফিরুল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে মক্কা মদিনার ছেয়ে হাজার হাজার গুণ বেশি সওয়াব ইজতেমায় সেখানে মানুষ খুব সহজে ইজতেমায় না গিয়ে কেনই বা লাখ লাখ টাকা খরচ করে মক্কা মদিনায় যাবে !!!
আবার ও বলি নাউযুবিল্লাহ

দেখুন কত জঘন্য মিথ্যাচার। ইতিহাসে এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর কেউ করেছে কিনা সন্দেহ। “দাওয়াতে তাবলীগ” নামক এক তাবলিগী বই পড়তে গিয়ে হতবাক হয়ে গেলাম। এমন মিথ্যাচার কিভাবে করা সম্ভব?
এই তাবলিগী লেখক উক্ত কিতাবের ৮০ পৃষ্ঠায় লিখেছে , মক্কা শরীফে এক রাকাত নামাজ পড়লে এক লক্ষ রাকাত নামাজের ছাওয়াব। মদীনা শরীফে নামাজ পড়লে পঞ্চাশ হাজার রাকাত রাকাতের ছাওয়াব। বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফে নামাজ পড়লে পঁচিশ হাজার রাকাত নামাজের ছাওয়াব।


কিন্ত... বিশ্ব ইজতেমায় এসে নামাজ পড়লে উনপঞ্চাশ কোটি রাকাত নামাজের ছাওয়াব হয়। (লা’হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)
(রেফারেন্স: দাওয়াতে তাবলীগ, পৃষ্ঠা ৮০, লেখক: আশরাফ আলী তালেবী, প্রকাশনা: আফতাবীয়া লাইব্রেরি)
জঘন্য মিথ্যাচারের এখানেই শেষ নয়। এই নিকৃষ্ট কথার দলীল দিয়েছে ইবনে মাজাহ শরীফ ও আবু দাউদের নাম ভাঙ্গিয়ে।


                                   বিঃদ্রঃ উক্ত কিতাবের স্ক্যান কপি উপরে ছবিতে দেয়া আছে।

এতটুকুও বুক কাঁপলো না এমন মিথ্যাচার করতে?
আল্লাহ পাকের ঘর কাবা শরীফ, নবীজীর মসজিদ মসজিদে নববী থেকেও এদের টঙ্গীর ময়দানের দাম বেড়ে গেলো?
এরপরও কি সাধারন মানুষ এদের ফাঁদে পা দিয়ে এদের দলে যোগ দিবে? এখনও কি আপনাদের মাথায় ঢুকে না কেন কুরান ও হাদিসে অনুসারি আলেমরা এই বিদআতের বিরুদ্ধে বলে।

আমি যখন ১ম আমার ফেসবুক ওয়ালে এটা নিয়ে পোস্ট করি তখন অনেক তাবলিগ বন্ধু ও ভাইয়েরা আমার উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। তাদের অনেকের ধারণ এটা আমি মিথ্যা প্রচার করতেছি, কেউ বা বুঝাল এটা ফটোশপ, আবার কেউ বা বুঝাতে চাইল যে লিখেছে সে তাবলিগ বা দেওবন্ধীদের কেউ না। আর ও কত যুক্তি । মুকুট নামে একভাই বলে উঠল ইজতেমা আসলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়।  মুলত তারা পীরের মুরিদের মত অন্ধ বিশ্বাসকে পুজি করে তর্কই করে গেছে । একবার ও যাচাই করেনি এর পিছনে কারা ছিল ।

আসুন আমরা দেখে নিয় এই বইয়ের লেখক এবং কিতাবটিকে কারা সত্যায়ন করেছেন?
মুলত এই বইটি লিখেছেন মাওলানা মুফতী আশরাফ আলী তলেবী

তাছাড়া বাংলাদেশের দেওবন্দীদের অন্যতম সব মুরুব্বীরা এই বইটি সত্যায়ন করে বাণী দিয়েছেন। যারা সত্যায়িত করেছে তাদের বক্তব্যসহ স্ক্যান কপি নিচে দেয়া হয়েছে। তারা হলেন,

আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব,নায়েবে আমীর হেফাজত ইসলাম, সত্যায়ন করেছেন ০৯/০৯/২০০৮ ও   মুফতি ফজলুল হক আমীনি, সত্যায়ন করেছেন ০৬/০৮/২০০৬ তারিখে ।


                                    আল্লামা ইসহাক আল গাজি, সত্যায়িত করেছেন ০৯/১০/২৬ হিজরীতে



                মাওলানা মহিউদ্দিন খান- সম্পাদক মাসিক মদিনা, মাওলানা মোঃ মজাম্মেল হক


                                                        আল্লামা আব্দুল হালিম আল বুখারি,


                                                               মুফতি শামসুদ্দিন (জিয়া)।

এদের সত্যায়ন দ্বারাই বোঝা গেলো এরাও এই আক্বীদা পোষন করে থাকে। তাদের কাছে টঙ্গীতে নামাজ পড়ার মূল্য মক্কা শরীফ, মদীনা শরীফ, বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ থেকেও বেশি। নাউযুবিল্লাহ।
এই যদি হয় আলেমদের অবস্থা, তাহলে বুঝুন সাধারণ জনগণের কি অবস্থা! জনগন ঠিকই ধরে নিয়েছে এটা গরিবের হজ্জ-
এরপরও যারা এদের দলে যোগ দিবে তারা আদৌ হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত কিনা বিচারের ভার আপনাদের হাতে থাকলো। আর রাসুল সা. এর সুন্নাহ ও তার রেখে যাওয়া দ্বীন কতটা নিরাপদ এদের হাতে তাও ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।
এ জালিয়াতি সম্পর্কিত পূর্বের পোষ্টটি দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
তাবলীগ জামাত কি ? বিস্তারিত জানুন

https://youtu.be/bf3eg-mu6no
https://youtu.be/bgHn4MDlUw8
https://youtu.be/caYQmUgXCvw
https://youtu.be/zBI1LEZQdSU
এরপরও যারা এদের দলে যোগ দিবে তারা আদৌ

Hallwoeen/ হ্যালোইন কি ? হ্যালোইন কাদের উৎসব আর কারা পালন করে ।

Hallwoeen/হ্যালোইন কি আসলে আমি জানতাম না। তবে সকাল থেকে ২ জনের ২ টা পোস্ট দেখে জানতে ইচ্ছে হল। একজনের পোস্ট খুব গায়ে লাগল। তাই অফিস থেকে আসার পর গুগল মামারে জিগাইলাম। এ নিয়ে আমার আজ লেখার কথা ছিলনা। কিন্তু লিখলাম সাদা চামড়াদের পদলেহী কিছু বাঙালিদের কথা মনে করে। সাদা চামড়াওয়ালা মানুষগুলো যা করে তাই যেন আমাদের করতে হবে – এমন বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াগ্রস্থ চিন্তার কারনে গেল বছর ঢাকায় ৩১শে অক্টোবর রাতে হ্যালোউইনের উৎসব আয়োজন করেছিল কিছু আবাল।
Halloween শব্দের বর্তমান মানেটা হল ‘Hallowed evening’, ‘Holly evening’ (পবিত্র সন্ধ্যা)।
এর উৎপত্তি কোথা থেকে?
সেল্টিকরা সাও-উইনের রাতে নিজেদের ঘরের সামনে খাবার রেখে দিত। উদ্দেশ্য থাকত, মৃতদের জগত থেকে উঠে আসা খারাপ আত্মাগুলো যেন এই খাবার পেয়ে সন্তুষ্ট হয়ে চলে যায়, ঘরের ভেতর যেন আর না প্রবেশ করে।

কেন এই উৎসব? কী হত এই উৎসবে?
সেল্টিকদের বিশ্বাস ছিল, এই রাতে মৃতদের খারাপ আত্মা দুনিয়াতে ভ্রমণ করতে আসে। খারাপ আত্মাগুলো ফসলের ক্ষতি করে। তাদের খুশি করার জন্য সেল্টদের প্রধান পুরোহিত খড়-লাকড়ি আর লতাপাতা জালিয়ে বিশাল আগুনের ব্যবস্থা করত। এই আগুনে সেল্টিকরা তাদের ফসল আর গৃহপালিত পশু-পাখি নিক্ষেপ করে সেগুলোকে জ্বালিয়ে খারাপ আত্মাদের প্রতি উৎসর্গ করত।
খারাপ আত্মাদের প্রতি ‘উৎসর্গমূলক’ এই অনুষ্ঠানটা ছিল প্রেত সাধনার মত। সেটা কীভাবে?
সেল্টিকরা মনে করত, গ্রীষ্মের শেষে খারাপ আত্মাগুলো পৃথিবীতে চলে আসার কারনেই ফসল ফলেনা, গাছের পাতা শুঁকিয়ে যায়, গাছ মারা যায়, চারপাশের সব মৃত আর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তারা এটাও বিশ্বাস করত, মৃতদের আত্মা ত্রিকালজ্ঞ – অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ সব কিছু জানে আত্মারা। সেল্টিকরা ভাবতো, এই রাতে খারাপ আত্মাদের সন্তুষ্ট করতে পারলে সেল্টদের প্রধান পুরোহিতগণ তাদের মাধ্যমে ভবিষ্যতের ফসল-ফলাদি আর চাষাবাদের ব্যাপারে সম্যক ধারণা পাবে। কারণ তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, খারাপ আত্মাগুলোই তো ফসল ফলা না ফলার জন্য দায়ি।
খারাপ আত্মাগুলো যেন তাদের কোন ক্ষতি না করতে পারে এই ভেবে উৎসবের পুরোটা সময় জুড়ে সেল্টিকরা অদ্ভুত সব পোশাক আর মুখোশ পড়ত, একটা ছদ্মবেশে থাকত। পোশাকগুলো হত কল্পিত ভূতপ্রেতের মত। সেল্টিকরা এই কাজ করত এই ভেবে, তারা যদি ভূতপ্রেতের পোশাক পড়ে ছদ্মবেশ নেয় তবে ওপার জগত থেকে উঠে আসা খারাপ আত্মাগুলো তাদেরকে চিনতে পারবেনা, বেঁচে থাকা সেল্টিকদেরকে নিজেদের সদস্যই মনে করবে। ফলে খারাপ আত্মাদের দ্বারা তাদের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা।
সেল্টিকদের অঞ্চলগুলোতে ক্রিশ্চিয়ান ধর্ম প্রবেশ করা শুরু করলো একসময়।
৬০৯ সালে তৎকালীন পোপ সিদ্ধান্ত নিলেন, ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের সাধুসন্ন্যাসী আর ধর্মযুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের আত্মাকে স্মরণ করে প্রতিবছর একটা শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান আর একটা ফিস্টের আয়োজন করা হবে। সেই বছর দিনটা পড়লো ১৩ই মে। কী মনে করে পরবর্তী পোপ এসে সেই দিনটাকে ১৩ই মে থেকে সরিয়ে নভেম্বরের ১ তারিখে নিয়ে গেলেন। এই দিনটাকে তখন থেকে বলা হয় All Saints Day বা All Souls Day – মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার দিন।
এরই মধ্যে সেল্টিক মানুষগুলোর মধ্যে ক্রিশ্চিয়ানটি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লো, মানুষ দলে দলে ক্রিশ্চিয়ানিটিতে দীক্ষিত হতে লাগলো। ক্রিশ্চিয়ানিটি আর সেল্টিকদের সংস্কৃতি মিশে একাকার হয়ে যেতে লাগলো একসময়।
ঐতিহাসিকদের মতে, চার্চ চাইত যে মৃতদের আত্মাকে কেন্দ্র করে সেল্টিকরা যে ‘সাও-উইন’ উৎসব পালন করে সেটাকে All Saints Day দিয়ে পরিবর্তিত করে দিতে। All Saints Day উৎসবটাও ‘সাও-উইন’ উৎসবের ন্যায় একই ঢঙে পালিত হতে লাগলো। এদিনও বিশাল আগুনের ব্যবস্থা করা হত, ক্রিশ্চিয়ানরা সাধুসন্ন্যাসী, দেবদূত আর শয়তানের কস্টিউম পরে ছদ্মবেশ নিয়ে ঘোরাঘুরি করত।
‘All Saints Day’কে ‘All-hallowmas’ আর ‘All-hallows’ বলেও ডাকা হত। কারণ মিডল ইংলিশে[ ‘Alholowmesse’ মানে হচ্ছে ‘All Saints Day’।
নভেম্বর ১ তারিখ হচ্ছে ‘All-hallows’ উৎসবের দিন। এর আগের রাত অর্থাৎ ৩১শে অক্টোবর সাও-উইনের রাতকে বলা হত All-hallows’ eve। স্কটিশ ভাষায় ‘Eve’ মানে হচ্ছে ‘even’; একে বলার সময় e’en বা een বলা হত। সময় অতিক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে এক সময়ের All-hallows’ eve টা হয়ে গেল (All) Hallow(s) e(v)en বা Halloween।

কারা এই সেল্টিক?
সেল্ট (Celt) নামে পৃথিবীতে এক কালে ইন্দো-ইউরোপীয় একটা জাতি ছিল। লৌহযুগের সময়কালে এরা পৃথিবীতে বসবাস করত। আজ পৃথিবীর যে অংশটা আয়ারল্যান্ড আর ফ্র্যান্সের উত্তরাংশ, এক কালে এখানেই সেল্ট জাতি গোড়াপত্তন করেছিল।
ধর্মে তারা বহু-ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী এবং মূর্তিপূজক ছিল।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জী দিয়ে হিসেব করলে সেল্টিকদের বছর শেষ হত অক্টোবরের ৩১ তারিখে এবং বছর শুরু হত নভেম্বর ১ তারিখ থেকে। নভেম্বরের ১ তারিখকে ধরে নেয়া হত গ্রীষ্মের শেষ, সে হিসেবে ঠাণ্ডা শীতকালের শুরু। সেল্টিক মানুষগুলো শীতকালকে ভয় পেত কারণ তখন ফসল উৎপাদিত হত না। শীতকাল তাদের জন্য ছিল ‘অন্ধাকারাচ্ছন্ন’ আর ভয়ের।
সেল্টিকরা বিশ্বাস করতো, নতুন বছরের আগের রাতে অর্থাৎ অক্টোবরের ৩১ তারিখে ওপার জগত আর এপার জগতের মধ্যকার পর্দা সংকুচিত হয়ে যায়, মৃতদের সাথে এই দুনিয়ার মানুষদের সংযোগ ঘটে। তাই ৩১শে অক্টোবর সুর্য ডুবে যাওয়ার পরপরই সেল্টিকরা Samhain (উচ্চারনটা হবে ‘সাও-উইন’) নামে একটা উৎসব করত, যেটার ব্যপ্তি হত পরের দিন, অর্থাৎ নভেম্বর ১ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
এই হচ্ছে হ্যালোইন উৎসবদের উৎপত্তির কাহিনী আর বর্তমান অবস্থা – আগাগোড়া যেটা পুরোটাই শয়াতানি, প্রেতসাধনা, কুসংস্কার আর শির্কি।
এই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের একটা কথা মনে পড়ে গেল,
তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরন করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনূকরন করবে।
জিজ্ঞাসা করা হলো, “ইয়া রাসুলাল্লাহ, এরা কি ইহুদি ও নাসারা?” তিনি বললেন, “আর কারা!
সহীহ বুখারী ৬৮২১ নাম্বার হাদীস।
হ্যালোইনের রাতে বিভিন্ন অদ্ভুত সব কস্টিউম পরেহ্যালোইন উৎসবে যাওয়া হারাম, কারণ এতে বহু-ঈশ্বরবাদী মূর্তিপূজক সেল্টিক আর আর ক্রিশ্চিয়ানদের সাদৃশ্য হয়। বিজাতিদের সাদৃশ্য হওয়া উম্মতের ঐক্যমতে হারাম।
আপনি একবার ভেবে দেখুন কারণ আপনি মুসলিম। দুষ্ট জিন, জাদু আর শয়তান থেকে মুক্ত থাকার জন্য কুরআনে আল্লাহ কতগুলো আয়াত দিয়েছেন। অথচ আমরাই আবার শয়তানের সাদৃশ্য নিচ্ছি, বাচ্চাদের পাঠাচ্ছি Trick-or-Treat’এর মত অনিষ্টকর কাজে।

বুধবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৭

তাবলীগ জামাত কি বিস্তারিত জানুন

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম



সাধারণত একজন মুসলিম যখন আর একজন কাফের বা অন্য ধর্মের অনুসারীকে দাওয়াত দেয় বা ইসলামের পথে আহব্বান করে সেটাকে তাবলীগ বলে । আর যদি একজন মুসলিম এক মসজিদ থেকে বের হয়ে আর এক মসজিদে গিয়ে তার মুসলিম ভাইকে দাওয়াতে কথা বলে সেটাকে বলা হয় তালীম । আসুন নিচে বিস্তারিত জেনে নিয় ।ইলায়াসী তাবলীগ বনাম রাসূলের তাবলীগ এর পার্থক্যসমূহ জানতে ক্লিক করুন

0তাবলীগী জামাআত কী?
তাবলীগ আরবী শব্দ যার অর্থ প্রচার করা। আর জামাআতও আরবী শব্দ যার অর্থ দল, সঙ্ঘ, সম্প্রদায় ইত্যাদি। অতএব তাবলীগ জামাআত অর্থ হলো প্রচারের দল। প্রচারকারী দল বিভিন্ন রকমের হতে পারে। ইসলাম প্রচারের দলকে  ইসলামী তাবলীগী জামাআত অথবা দাওয়াতে ইসলামীনাম হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু দুনিয়ায় ইসলামের শত্রুরা তো বটেই এমনকি অনেক নামধারী ঈমানের দাবীদাররা ইসলাম শব্দটাকে সহ্য করতে পারে না, তাই মনে হয় তারা ইসলাম শব্দটি বাদ দিয়ে তাবলীগ জামাআত প্রচার করে তার নিসাব প্রতিষ্ঠা করার কৌশল অবলম্বণ করেছেন।
০২তাবলীগী জামাআত কী প্রচার করে?
সার্বিকভাবে মূলতঃ তারা পূর্ণাঙ্গ ভাবে ইসলাম প্রচার করে না। তারা ইসলামের কথা মুখে বললেও মূলতঃ তারা মাযহাবের নামে ফিরকা ও তরীকার নামে তাসাউফের দিকে আহবান করে থাকে। ঈমানের দাওয়াতের নামে তারা মুলতঃ ওহাদাতুল ওজুদ অর্থাৎ সর্ব ইশ্বর বাদের দিকে আহবান করে যা মুলতঃ কুফর, মুসলমানদের সালাতের দাওয়াত দেন, সৎ কাজের উপদেশ দেন, ও অসৎ কাজ হতে দূরে থাকার আনুরোধ করেন। কিন্তু সমাজ সংস্কারের জন্য কুরআন জানা ও তাঁর বিধি-বিধানকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোন চেষ্টা করা হয় না। কুরআনকে শুধু তুতার বুলিরমত তিলাওয়াত পর্যন্ত সিমাবদ্ধ রাখা হয়। তাঁকে অর্থসহ জানা ও তাফসীর জানার প্রতি উৎসাহ তো দূরের কথা উপরন্ত আরো নিরুৎসাহীত করা হয়। বরং অত্যান্ত সজ্ঞানে ও কোশলে কুরআনকে মাসজিদ থেকে বের করার ইহুদী-নাসারার চক্রান্তে তারা সহযোগী বলে মনে হয়। কারণ মাসজিদ গুলোতে এখন কুরআনের দরস বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এখন মসজিদে ফাযালেলে আমলেরতালিম হয়। আল-কুরআনের দরস তারা শুনতে চায় না বরং তারা বলে ১৫টি ভাষায় পারদর্শি না হলে কুরআন বুঝা সম্ভব নয়, এভাবে নানান অজুহাত দেখিয়ে তারা লোকদেরকে কুরআনের পথ থেকে নিবৃত করছে।


০৩তাবলীগী জামাআতের প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি
হিন্দুস্থানের উত্তর পশ্চিম সীমান্তের একটি রাজ্যের নাম হবিয়ানা এখনকার পূর্বের নাম পাঞ্জাব। হিন্দুস্থানের রাজধানী দিল্লীর দক্ষিণে হরিয়ানায় একটি এলাকার নাম মেওয়াত। যার পরিধি দিল্লীর সীমান্ত থেকে রাজস্থান রাজ্যের জয়পুর জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মেওয়াতে (১৩০৩) হিজরীতে এক হানাফী সূফি বুজুর্গের জন্ম হয়। তাঁর ঐতিহাসিক নাম ‘‘আখতার ইলিয়াস’’কিন্তু পরবর্তিতে তিনি শুধু ইলিয়াস’ নামে পরিচিত হন। ইনি ১৩২৬ হিজরীতে দেওবন্দ মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাহমূদুল হাসান সাহেবের কাছে বুখারী ও তিরমিযী গ্রন্থদয় শ্রবণ করেন। তাঁর দুবছর পরে ১৩২৮ হিজরীতে তিনি সাহারানপুরের মাযাহিরুল উলুমের শিক্ষক হন। ১৩৪৪ হিজরীতে তিনি দ্বীতীয় বারে হজ্জে যান। এই সময়ে মাদ্বীনায় থাকা কালীন অবস্থায় তিনি (গায়েবী) নির্দেশ পান যে, আমি তোমার দ্বারা কাজ নেব। অত:পর ১৩৪৫ হিজরীতে তিনি দেশে ফিরে এসে মেওয়াতের একটি গ্রামে নাওহেতাবলীগী কাজ শুরু করেন। পরিশেষে ১৩৬৩ হিজরীর ২১ শে রজব মোতাবেক ১৩ই জুলাই ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন। (আবুল হাসান আলী রচিত হযরত মাওঃ ইলিয়্যাস আওর উনকী দ্বীনি দাওয়াত, ৪৮, ৫৭,৬১ ও ১৯৩ পৃঃ, গৃহীত ইলিয়্যাসী তাবলীগ দ্বীন ইসলামের তাবলীগ পৃঃ ৯)

০৪ তাবলীগের উদ্দেশ্য কি ?
তাবলীগের উদ্দেশ্য অনেক মহৎ তারা মানুষকে ভাল কাজের দিকে আহব্বান করে, মানুষকে ভাল ভাল কথা বলে,  সালাত আদায়ের জন্য বলে এবং তারা নিজেরা সময়নুযায়ী সালাত আদায় করে অথচ অনেক বড় আলেমরা দেখা যায় সঠিকভাবে সময়ানুযায়ী সালাত পড়ে না। কিংবা যোহর পড়লে ফজর পড়ে না। অথচ কাফির আর মুসলমানের মধ্য পার্থক্যকারী হচ্ছে সালাত এই হাকীকাত বা বাস্তবতাকে কিভাবে অস্বীকার করা যায় যে, ছোট একটি তাবলীগী জামাআত দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে হিন্দুস্থানের বতী জনপদ (দিল্লীর) নিজামউদ্দ্বীন থেকে সর্বপ্রথম কাজ শুরু করে এবং পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন প্রত্যেক গ্রামে-গঞ্জে, জনপদে গাস্তের প্রচলন এবং রাতের বেলায় মাসজিদে কিয়াম (অবস্থান) বা শবগুযারী প্রসিদ্ধ। এছাড়া বাংলাদেশের রাজধানীর তুরাগ নদীর তীরে টুঙ্গির ইজতেমায় লক্ষ লক্ষ মানুষের যে গণজমায়েত, পাকিস্তানের শহর লাহোর সংলগ্ন রায়েবন্ডের ইজতিমায় যে জনসমুদ্র দেখা যায়, তা কোন দুনিয়াবী বা পার্থিব উদ্দেশ্যে জমা হয় না। বরং সকলের অন্তরে একটাই পিপাসা বা ব্যাকুলতা আর বাসনা। তা হল আমাদের রব আমাদের প্রতি খুশী হয়ে যাক এবং নাবী (সাঃ) -এর বারাকাতময় তরীকা আমাদের জিন্দেগীতে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এই পথভোলা বা বিপথগামী মানুষগুলো যাতে পুনরায় সঠিক পথের সন্ধান পায় অর্থাৎ সিরাতে মুস্তাকিমের পথ পাক সেই জযবা বা আবেগ ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য তাদেরকে মাজবুর বা বাধ্য করে। স্বীয় মাল সম্পদ খরচ করা, নিজের বিছানা নিজে উঠানো, অলি-গলিতে আল্লাহর যিক্র করা এবং মুখালিফ বা বৈরীর সঙ্গে সদাচরণ ও সহানুভূতি, জযবায়ে ঈছার আত্মদান ও দ্বীনের জন্য ত্যাগ ছাড়াও এই ধরনের অন্যান্য সৎগুণ তাবলীগ জামাআতের সাথীদের মধ্যে পাওয়া যায়। এই জাতীয় গুণাবলী একজন মুসলিমের মধ্যে থাকা দরকার বা আবশ্যক। কিন্তু এই সকল গুণাবলী সত্ত্বেও একটি অত্যাবশ্যকীয় এবং মৌলিক বিষয়ে ভুল থেকে যায়, আর তা হল আক্বীদার সংশোধন বা বিশুদ্ধ আক্বীদাহ। আক্বীদাহ যদি সঠিক না হয়, তাহলে সমস্ত নেক আমাল নিস্ফল হয়ে যায়। আর নেক আমালের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে তাওহীদের বা একত্ববাদের উপর। কারণ তাওহীদ নেই তো কিছুই নেই।

০৫তাবলীগী নিসাব পরিচিতি
তাবলীগী জামাআতের মূল গ্রন্থ হলো তাবলীগী নিসাবতাবলীগ অর্থ প্রচার এবং নিসাব অর্থ নির্দ্দিষ্ট পাঠ্যসূচী অর্থাৎ তাবলীগী নিসাবে যা কিছু আছে তা তাবলীগের অনুসারীদের জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি এবং পালনীয়। জামাআতের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইলিয়াস এর নির্দেশে ভারতেরই এক রাজ্য উত্তর প্রদেশের সাহারামপুর জেলার কান্ধেলাহ নিবাসী ও মাযাহিরুল উলুম সাহারানপুরের সাবেক শাইখুল হাদীস যাকারিয়া হানফী নয় খানা বই লেখেন উর্দু ভাষায়। বইগুলির সমষ্টিগত পূর্ব নাম তাবলীগী নিসাব এবং বর্তমান ফাযায়েলে আমাল নামে পরিচিত, নয়টি বই এর আলাদা নাম নিম্মরূপ- ১। হেকায়েতে সাহাবা। ২। ফাযায়েলে নামায, ৩। ফাযায়েলে তাবলীগ, ৪। ফাযায়েলে যিকর। ৫। ফাযায়েলে কুরআন, ৬। ফাযায়েলে রমাযান। ৭। ফাযায়েলে দরূদ। ৮। ফাযায়েলে হজ্জ। ৯। ফাযায়েলে সাদাকাত-১ম, ২য় খন্ড। পরবর্তীকালে কোন কারণ না দর্শিয়ে খলিফা ইহতিশামুল হাসান সাহেব রচিত ‘‘মুসলমান’’ কী পুস্তীকা ওযাহিদ ইলাজ’’ নামক বইটি সন্নিবেশিত করা হয়। গ্রন্থগুলি একত্রিত করে তাবলীগী নিসাব বর্তমানে দুটি গ্রন্থের রূপ দেওয়া হয়েছে, ১ম টি ফাযায়েলে আমল যা ৮ খন্ডে মিলে একটি। আর দ্বিতীয়টি ফাযায়েলে সাদাকাত যা দুখন্ডে মিলে একটি গ্রন্থ। দুটি হচ্ছে আম বা অনির্দিষ্ট। এছাড়াও তাদের খাস বা নির্দিষ্ট দুটি গ্রন্থ আছে একটি ইমাম নবভীর রচিত রিয়াদুস সালেহীনযা শুধু আরবদের জন্য খাস বা নির্দিষ্ট গ্রন্থ। অন্যটি জনাব ইলিয়াসের পুত্র মুহাম্মাদ ইউসুফ কান্ধলভী প্রণীত হায়াতুস সাহাবাসর্বমোট তাদের নিসাব গ্রন্থ ৫টি তার মধ্যে দুটি আসল বা আম আর দুটি খাস গ্রন্থ।
৩। গ্রন্থ চতুষ্টয়ের অবস্থা : সৌদি আরবের এক বিখ্যাত আলেম আবূ মুহাম্মাদ নাযযার ইবনে ইব্রাহীম আল জাররা বলেন, (ইলিয়াসী) তাবলীগী জামাআত তাঁদের দাওয়াতী কাজে তিনটি কিতাবের উপর নির্ভর করেন। তা হলো :
১। ইমাম নবভীর রিয়াদুস সালেহীনযা শুধু মাত্র আরবদের জন্য নিদিষ্ট। (যেহেতু আরবরা জাল যঈফ হাদীস গ্রহণ করে না তাই তাদের জন্য এই বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থখানা যার মধ্যে অধিকাংশ হাসান ও সহীহ হাদীসের সমাহার ঘটেছে যদিও সামান্য কিছু দূর্বল হাদীস মুহাক্কীকদের নিকট ধরা পড়েছে।
২। মুহাম্মাদ যাকারিয়া কান্ধালভীর তাবলীগী নিসাববা বর্তমান ফাযায়েলের আমলযেটি তাবলীগী জামাআতের আসল বই। যা ভারত উপমহাদেশসহ অন্য প্রায় দেশে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এবং মাসজিদ গুলিতে কুরআন সুন্নাহর তালীমের স্থানে ঐগ্রন্থদয় পঠিত হচ্ছে (ফাযায়েলে আমাল ও সাদাকাত) এই বই এর মধ্যে কুরআনের ও হাদীসের কিছু কথা থাকলেও তার অধিকাংশ অপব্যাখ্রায় ভরপুর। এবং অনেক কথা আছে যা আল কুরআন ও সহীহ হাদীসের সাথে সংঘষিক। এছাড়া গ্রন্থদ্বয়ে বহু জাল ও যঈফ হাদীস ছাড়াও ভ্রান্ত সূফিদের স্বপ্নের কিচ্ছা কাহানীর উদ্ভট তথ্য সহ অনেক শিরক বিদআত যুক্ত ভ্রান্ত আক্বীদার বিষয়ও রয়েছে। যা আমরা সংক্ষিপ্ত হলেও আপনাদের হাতের গ্রন্থটিতে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি।
৩। মুহাম্মাদ ইলিয়াসের পুত্র মুহাম্মাদ ইউসূফ কান্দালভী প্রনীত হায়াতুস সাহাবাএর ত্রুটিও আগেরটির মতো মনগড়া কাহিনী এবং জাল ও যঈফ হাদীসে পরিপূর্ণ। (আকফাতুন মাআ জামাআতিত তাবলীগ, ৯-১০ পৃ:, বিয়ায ছাপা, ২য় সংস্কারণ, ১৪১০ হিজরী গৃহীত প্রাগুক্ত ১২ পৃ:)

০৬ বিশ্ব ইজতেমা কি ?
ইজতেমাশব্দের অর্থ সমাবেত করা, সভা-সমাবেশ বা সম্মেলন। ধর্মীয় কোন কাজের জন্য বহুসংখ্যক মানুষকে একত্র করা, কাজের গুরুত্ব বোঝানো, কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া এবং ব্যাপকভাবে এর প্রচার-প্রসারের জন্য বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা ইত্যাদি বিষয়কে ইসলামের পরিভাষায় ইজতেমা বলা হয়। তাবলীগ জামাআতের বড় সম্মেলন হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা

০৭ বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস কি ?
১৯৪৪ সালে প্রথম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার কাকরাইল মসজিদে। ১৯৪৮ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে এবং ১৯৫০ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে। ১৯৬৫ সালে টঙ্গীর পাগার নামক স্থানে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল খুব ছোট পরিসরে। এরই মধ্যে তাবলীগের কার্যক্রম বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে, শহর-বন্দরে, ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ইজতেমায় দেশি-বিদেশী বহু মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। ১৯৬৭ সালে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার স্থান নির্ধারণ করা হয়। তখন থেকেই বিশ্ব ইজতেমা সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশের পরিণত হয়! ১৯৭২ সালে সরকার টঙ্গীর ইজতেমাস্থলের জন্য সরকারী জমি প্রদান করেন এবং তখন থেকে বিশ্ব ইজতেমার পরিধি আরো বড় হয়ে উঠে। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার এ জায়গায় ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয় এবং অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন ঘটায়। উক্ত ইজতেমার বিশেষ আকর্ষণ হল এই আখেরী মুনাজাত!

০৮ আখেরী মোনাজাত কি ?
মানুষ এখন ফরয ছালাত আদায়ের চাইতে আখেরী মুনাজাতে যোগদান করাকেই অধিক গুরুত্ব দেয়। আখেরী মুনাজাতে শরীক হবার জন্য নামাজী, বে-নামাজী, ঘুষখোর, সন্ত্রাসী, বিদআতী, দুস্কৃতিকারী দলে দলে ময়দানের দিকে ধাবিত হয়। কেউ ট্রেনের ছাদে, কেউ বাসের হ্যান্ডেল ধরে, নৌকা, পিকআপ প্রভৃতির মাধ্যমে ইজতেমায় যোগদান করে। তারা মনে করে সকল প্রাপ্তির সেই ময়দান বুঝি টঙ্গির তুরাগ নদীর পাড়ে। মানুষ পায়খানা-পেসাব পরিষ্কার করেও সেখানে সওয়াবের আশায় থাকেন। এ যেন সওয়াবের ছড়া ছড়ি, যে যতো কুড়ায়ে থলে ভরতে পারবে তার ততোই লাভ। ট্রেনের ছাদের উপর মানুষের ঢল দেখে টিভিতে সাংবাদিক ভাইবোনগণ মাথায় কাপড় দিয়ে বার বার বলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আজ তাদের পাপের প্রাশ্চিত্ত করতে ছুটে চলছেন তুরাগের পাড়ে! পরের দিন বড় হেডিং দেখে যারা এবার যেতে পারেননি তারা মনে মনে ওয়াদা করে বসবেন যে আগামীতে যেতেই হবে। তা না হলে পাপীদের তালিকায় নাম থেকেই যাবে! এভাবে পঙ্গোপালের মতো এদের বাহিনী বড়তে থাকবে। এদের আর রুখা যাবে না। কেননা স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে, বিরোধীদলিয় নেত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণও সেখানে গিয়ে আঁচল পেতে প্রার্থনা করেন। টিভিতে সরাসরি মুনাজাত সম্প্রচার করা হয়। রেডিও শুনে রাস্তার ট্রাফিকগণও হাত তুলে আমিন! আমিন! বলতে থাকে। কি সর্বনাশা বিদআত আমাদের কুড়ে কুড়ে গ্রাস করছে তা আমরাও জানি না! আরাফার মাঠে হজ্জ এর সময় লক্ষ লক্ষ লোক সমাগম হয়। সেখানে কেন সম্মিলিত মুনাজাত হয় না? যেখানে আল্লাহ নিজে হাযির হতে বলেছেন, যেখানে তিনি অগণিত মানুষকে ক্ষমা করে দেন। এই প্রশ্নের জবাব যারা বুঝতে চেষ্টা করেছে তারাই বুঝতে পারবে কেন বিশ্ব ইজতেমা বিদআত? সম্মিলিত মুনাজাত এর কারণেই বিশ্ব ইজতেমা বিদআত। যদি আখেরী মুনাজাত না হত তবে অন্তত বলা যেত ইসলামিক আলোচনার জন্য বিশ্ব ইজতেমা। তাছাড়া এই ইজতেমা বিদআতী কিতাব থেকে বয়ান করা হয়। অনেকে আবার এই ইজতেমাকে ২য় হজ্জ বলে উল্লেখ করেন! (নাঊযুবিল্লাহ)

০৯ বিশ্ব ইজতেমা বিদাত কেন?
আরাফার মাঠে হজ্জ এর সময় লক্ষ লক্ষ লোক সমাগম হয়| আরাফার মাঠে স্বয়ং আল্লাহ হাজির হতে বলেছেন| আরাফার মাঠে কেন সকলে সম্মিলিত মুনাজাত করে না? যেখানে আল্লাহ নিজে হাজির হতে বলেছেন , যেখানে আল্লাহ অগণিত মানুষকে ক্ষমা করে দেন সেখানে কেন সকলে একসাথে মুনাজাত ধরে না? এই প্রশ্নের জবাব যারা বুঝতে চেষ্টা করেছে তারাই বুঝতে পারবে কেন বিশ্ব ইজতেমা বিদাত| সম্মিলিত মুনাজাত এর কারণেই বিশ্ব ইজতেমা বিদাত| যদি আখেরী মুনাজাত না হত তবে অন্তত বলা যেত ইসলামিক আলোচনার জন্য বিশ্ব ইজতেমা| তাছাড়া এই ইজতেমা বিদাতি কিতাব থেকে বয়ান হয় যদিও সহিহ কথাও কিছু বয়ান হয়| এখানে তিন দিন একাধারে অবস্থান করা অনেকটা হজ্জ এর সদৃশ| আপনি বলবেন এটাকে হজ্জ এর সাথে তুলনা করছেন কেন? আমরা বলি আপনি হজ্জ এর সদৃশ এমন জমায়েত বানালেন কেন? আপনি তিন দিন, পাচ দিন, সাত দিন, একদিন এমনভাবে বানাতেন! অনেক মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা পৌছে যাচ্ছে| অনেকেই মনে করছেন এই ইজতেমায় বসলে আসলে সওয়াব আছে| আসলে আছে গুনাহ| কারণ বিদাতি কাজে সহযোগিতা সওয়াব নয় বরং গুনাহ| কারণ বিদআতীদের সঙ্গ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। বিদআতী লোকেরা ক্বিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পান করতে পারবে না (ছহীহ মুসলিম হা/৪২৪৩)
 পত্রিকাগুলো খুলে দেখলেই পাবেন সাংবাদিকরাই শিক্ষিত লোকেরাই বলছে মুসলিম উম্মাহের ২য বৃহত্তম জমায়েত| ধর্মের মধ্যে এই ২য জমায়েত বানানো হলো কেন? বুঝার বিষয় আছে এখানে| ধর্ম নিয়ে ভালো কথা বললেও অনেক সময় গুনাহের কারণ হয়ে যায়| নামাজ পড়া ভালো কাজ অজু ছাড়া নামাজ কি ভালো কাজ? রোজা রাখা ভালো কাজ কিন্তু রাত্রেও যদি কেউ রোজা রাখে ? এতে কি সওয়াব হবে না গুনাহ হবে? বুঝতে হবে| হুট হাট কথা শুনেই মাথা আওলিয়ে ফেললে নিজেরই ক্ষতি|
তাহলে ওমর (রা:) কেন জামায়াতে তারাবিহ এর সালাত নিয়ে বললেন, ''এত সুন্দর বিদাত''?
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বুঝার চেষ্টা করতে হবে| রামাযানের প্রতি রাতে নিয়মিত জামাআতে তারাবীহ পড়াকে অনেকে বিদআত মনে করেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাত্র তিনদিন জামাআতে তারাবীহ পড়েছিলেন আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৯৮ রামাযান মাসে রাত্রি জাগরণঅনুচ্ছেদ-৩৭। দেখেন রাসুল (সা:) কিন্তু তিন দিন জামাতে তারাবিহ পড়ে দেখিয়ে দিয়েছেন| ফরজ হয়ে যাওয়ার আশংকায় তিনি আর জামাতে সকলকে নিয়ে পড়েন নি |
এবং ওমর ফারূক (রাঃ) নিয়মিত জামাআতে তারাবীহ চালু করার পরে একে সুন্দর বিদআত’( ﻧِﻌْﻤَﺖِ ﺍﻟْﺒِﺪْﻋَﺔُ ﻫٰﺬِﻩِ ) বলেছিলেন। বুখারী হা/২০১০; , মিশকাত হা/১৩০১ অনুচ্ছেদ-৩৭; মিরআত হা/১৩০৯, ৪/৩২৬-২৭।
এর জবাব এই যে, তিনি এজন্য বিদআত বলেন যে, এটিকে রাসূল (ছাঃ) কায়েম করার পরে ফরয হওয়ার আশংকায় পরিত্যাগ করেন।মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১২৯৫ রামাযান মাসে রাত্রি জাগরণঅনুচ্ছেদ-৩৭; আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৯৮।


১১। তাবলীগী জামঅাতের সমস্ত কিচ্ছা কাহিনী ও কবর পুজার ঘঠনার রেফারেন্স ও দলিল সহ জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন


১২। তাবলীগের কোন বইয়ের কত পৃষ্ঠায় কি শিরক আছে তা জানার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন

১৩। তাবলীগ জামাতের গোঁমর ফাঁস এর কিছু প্রমাণ

১৪। তাবলীগ জামা'আতের কিতাব “ফাযায়েলে আমাল” সম্পর্কে শায়েখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদের ফতোয়া

১৫। বিশ্ব বরেণ্য আলেমদের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামাত ও ফাযায়েলে আমল - সঊদী অরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের সদস্য শাইখ সালেহ বিন ফাওযান (রহঃ) নিষিদ্ধকরন ফতোয়া

১৬। তাবলীগে চিল্লা দেওয়া ও পুর্ব অভিজ্ঞতার বর্ণণা পড়ার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন

১৭। ফাজায়েলে আমল বা তাবলীগী নিসাব সম্পর্কে ‪#‎ডাঃ_জাকির_নায়েক এর মতামত নিম্নরূপঃ

১৮। তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের ''মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের'' ভ্রান্ত বক্তব্যঃ

১৯। তাবলীগ জামাত সম্পর্কে ইউটিউবে বিভিন্ন স্কলার ও শাঈখের লেকচার দেখার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন

তাবলীগ জামাত কি প্রচার করে দেখুন ভিডিওতে

২০। তাবলীগ এর কিতাবগুলোতে কি কি শিরকি কথা আছে তা কিতাবের ছবি সহ দেখার জন্য নিচের লিংকে ক্লিক করুন

২১। ফাযায়েল আমল ডাউনলোডের লিংক দেওয়া হল । যাচাই করুন

২২। নিচে যাচাই করার জন্য সহীহ হাদীসসমুহ ডাউনলোডের ২ টি লিংক দেওয়া হল

তাবলীগ জামাত ভাল কিছু করে এটা  যেমন সত্য তেমনি তাদের আকীদা বা ফাযায়েল আমলে শিরক আছে এটা ও সত্য আমি চেষ্টা করেছি তাবলীগের মুল জিনিসগুলো খুব গুছালোভাবে উপস্থাপন করতে আসলে শুধু তাবলীগের খারাপ দিক তুলে ধরা আমার উদ্দেশ্য ছিল না তাই ভাল খারাপ ২ টাই তুলে ধরেছি। আমি ছেয়েছি বাস্তব ও দলিল ভিত্তিক কিছু কথা উপস্থাপন করতে কতটুকু সফল হয়েছি জানি না তবে চেষ্ঠা করেছি যেহেতু মানুষ ভুল করে সুতরাং আমার ও অনেক ভুল হতে পারে। আপনারা আমার  ভুলগুলি আংগুল দিয়ে ধরিয়ে দিলে খুশি হব কারণ আমি ভুল সংশোধনের জন্য যে কোন মুহুর্তে প্রস্তুত তবে দয়া করে সম্পুর্ণ শেষ না করে তর্কে লিপ্ত হবেন না আর আমি যা  লিখছি তা বমানতে হবে বলে কোন কথা নাই শেষের দিকে ফাযায়েল আমল সহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থের লিংক দেওয়া আছে আপনারা নিজেরাই মিলিয়ে নেন কারণ আর একজনের উপর নির্ভর করে আর কতদিন যদি তাতে ও সমস্যা হয় তাহলে যে কোন মসজিদে ফাযায়েল আমল সহ অন্যন্য হাদীস গ্রন্থ পাওয়া যায় আর যদি এতে ও সমধান না হয় তাহলে আমার সাহায্য নিতে পারেন যে কোন হাদীস গ্রন্থ লাগলে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারেন বা লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন আমি কোন দল করি না সুতরাং আমি কোন দলের বিরোধীতা  ও করি না তবে আমি সবসময় শিরক আর বিদাত বিরোধী যেহেতু শিরক ক্ষমার অযোগ্য তাই সেটা কখন ও মেনে নেওয়া সম্ভব না তাই অনুরোধ করছি একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে পড়ুন এবং আপনার মতামত বা পরামর্শটা আমাকে জানান আশা করি কুরান হাদীসের বিরোধী কোন মত না হলে আমি খুব সহজে মেনে নিব এক সাপ্তাহ ধরে অনেক কাজ বাদ দিয়ে লিখতে বসেছি যদি মনে করি যে একজন ভাইকে হলে ও শিরক মুক্ত করতে পারলে ও লিখাটা সার্থক সবাই দোয়া করবেন আর ও কার ও মতের বিরুদ্ধে গেলে ক্ষমা করবেন