প্রতি সাপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল পেশ করা হয়। তিরমিজি হাদীসের মতে, রাসুল ( স) রোজা রাখা অবস্থায় আল্লাহর কাছে আমল পৌছাতে খুব বেশি পছন্দ করতেন। তাই সাপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার তিনি রোজা রাখতেন।
প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ রাসুল(স) রোজা রাখতেন এবং আবু দাউদের বর্ণণা মতে সাহাবিদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। একত্রে এই তিন দিন রোজা রাখা আইয়্যামে বীজ বলা হয়।
যে ব্যক্তি রমজানে রোজা রাখার পরে শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখে সে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। মুসলিম।
তিরমিজি হাদীসের আর এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি শাওয়াল মাসে ৬ রোজা রাখবে সে সদ্যজাত জন্ম নেওয়া শিশুর মত পবিত্র থাকবে।
(১) শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা:
আবু আইয়ুব আনসারি (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখবে অত:পর শাওয়ালে ছয়টি রোজা পালন করবে সে যেন সারাবছর রোজা রাখল । (মুসলিম শরীফ, ১১৬৪ নং হাদিস )
.
(২) সোম ও বৃহস্পতির সাপ্তাহিক রোজা: প্রতি সপ্তাহে সোমবার আর বৃহস্পতিবার নফল রোজা রাখার জন্য নবীকরিম (সা) জানিয়ে গেছেন আমাদেরকে, তিরমিযী শরীফের হাদিস: হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেন "সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল পেশ করা হয়। অতএব আমি পছন্দ করি যে, আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক যে, আমি রোজা রেখেছি"।
.
(৩) আইয়্যামে বীজের তিনটি রোজা: আবদুল মালেক বিন কুদামাহ বিন মালহান (রা:) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে আইয়ামে বীজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন’ (আবু দাউদ
তিরমিজির আরেক হাদীসে বলা হয়েছে, এক ব্যক্তি সারা বছর রোজা রাখার হুকুম চাইলে রাসুল(স) তাকে নিষেধ করে বলেন এতে পরিবারের হক নষ্ট হবে। বরং রমজানের ৩০ ও শাওয়ালের ৬ রোজা রাখলে সারা বছর রোজা রাখার নেকি পাওয়া সম্ভব ।
এবার আসি আসল কথায়, যাদের শাওয়াল মাসের ৬ রোজা শেষ করেছেন মাশা আল্লাহ। আর যারা শেষ করেননি তারা আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু করতে পারেন।
সোমবার চন্দ্র মাসের ১৩ তারিখ
সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার টানা রাখলে একসাথে ৩ টি সুন্নাত আদায় হবে ইন শা আল্লাহ।
তাই রোজা রাখার আগে ৩ টি সুন্নাত আদায়ের নিয়ত করবেন তবে মুখে পড়বেন না।
১৷ সাপ্তাহিক রোজার সুন্নাত
২। আইয়্যামে বীজ
৩। শাওয়ালের ৬ রোজা
পরবর্তী সোমবার ও বৃহস্পতিবার বাকি ২ টি থাকতে পারেন।
যারা ইতিমধ্যে ২ টা কিংবা ৩ টা রেখেছেন তারাও চাইলে এই আমল করতে পারেন।
এখানে উল্লেখ্য রমজানের ক্বাজা রোজা বাকি থাকলে সেটা আগে আদায় করতে হবে।
শাওয়ালের রোজা রাখা মুস্তাহাব। তবে এই রোজা নিয়ে গ্রামে গঞ্জে মহিলাদের মধ্যে কিছু কুসংস্কার চালু আছে।
আমরা অনেকে শুধুমাত্র শুক্রবার রোজা রাখা উত্তম মনে করি। এটা ভুল ধারণা। রাসুল (স) শুধুমাত্র শুক্রবার রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার অথবা শুক্র ও শনিবার একসাথে রাখতে পারেন।
তাছাড়া চন্দ্র মাসের শেষ ২ দিন অর্থাৎ সন্দেহের দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।
অনেকে মনে করে এই রোজা একবছর রাখলে প্রতিবছর রাখতে হয়, এটা ভুল ধারণা, এই রোজা ফরজ না মুস্তাহাব। তাই ব্যক্তি ইচ্ছে করলে রাখতে পারে, ইচ্ছে না করলে রাখবে না।
আবার এই রোজা অনেকে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য মনে করে সেটাও ভুল ধারণা। নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এমনকি শিশুরা চাইলে এই রোজা রাখতে পারবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন