শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৯

🚩#কে_বা_কারা_জেরুজালেম_বিক্রি_করছে❓❓

🖋  মি. এরদোগান,তুর্কিশ প্রেসিডেন্ট, মিডিয়ার মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই পৃথিবীর সাথে কথা বলেন। তার অদম্য বক্তব্যের একটা বড় অংশ সবসময়েই সৌদি অারবের বীরুদ্ধে। মরোক্কান ব্রাদারহুড সরকার এবং মিডিয়া ২৪ ঘন্টা এসব নিউজকে অনলাইন করে সাপোর্ট করছে। একি কাজে ব্যস্ত ইরানি ও কাতারি সরকার ও মিডিয়া।

অামি নিশ্চিত যেকোনো ধরনের যৌক্তিক প্রমান তাদের এসব বক্তব্যকে পরিবর্তন করতে পারবেনা। অামি অনেক অাগেই এই চেষ্টা ছেড়ে দিয়েছি।  এর পরিবর্তে অামি তাদের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা দ্বারা বিপথে পরিচালিত মানুষদেরকে কিছু বলতে চাই।

➡এখানে তাদের কিছু প্রধান অভিযোগ এবং অামার মতামত তুলে ধরা হলোঃ

⚠সৌদি অারব ইসরায়েলের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে!
⚠তারা ফিলিস্তিনের সার্থ রক্ষার্থে কোনো কাজ করছেনা!
⚠ সৌদি কর্মকর্তারা গোপনে ইসরায়েলে যেয়ে মিটিং করছে অামেরিকার প্রস্তাবিত শতাব্দির এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়ন করতে!

উপরের সবগুলোই মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা।  কোনটাই প্রমানিত হয়নি অাজও।একই সময় সব প্রমানিত সত্যকে পাশকাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তুর্কির সাথে ইসরায়েলের শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে যার মাঝে  ডিপ্লোমেটিক, মিলিটারি,ইকোনমিক ও  সাংস্কৃতিক সম্পর্কগুলো প্রধান।

ℹজেরুজালেম ও তেল অাবিবের ইসরাইলি  এমবাসি ও কনসুলেটে তুর্কি পতাকা মাথা উচু করেই উড়ছে প্রতিনিয়ত!  কাতার খুব সাধারনভাবেই প্রকাশ্যে ইসরাইলি মন্ত্রীপরিষদ ও কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনা দিয়ে সন্মানিত করছে। কিছুদিন পুর্বেই ওমান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে রাজকীয় সন্মাননা দিলো। ইসরায়েলের সাথে ব্যবসা ও লেনদেন করতে যেয়ে অসংখ্যবার ধরা খেয়েছে ইরান। মরক্কো এবং তিউনিসিয়া ইসরায়েলের সাথে তাদের সুসম্পর্কের বেপারে কোন গোপনিয়তা অবলম্বন  করেনা।

❗কিন্তু তার পরও তথাকথিত ইসলামপন্থি ও অারব-জাতীয়তাবাদী সমালোচকরা সৌদির বীরুদ্ধে  অন্ধের মতো সুনিশ্চিত গুজবগুলো নিয়ে মুখরিত থাকে। অামরা তাদেরকে বলি, অামরা ইসরাইলের কাছে ঋণি নই, তাই তাদের সাথে যদি সম্পর্ক রাখতেই হয় তাহলে তা অামরা প্রকাশ্যেই রাখতে পারতাম। কারোর ভয়ে বা অন্যকোনো কারনে তা গোপন রাখতে হতো না।

যাই হোউক, অামাদের মুসলিম ও অারব বিবেকবান(!)রা বলে অামরা ফিলিস্তিনের ব্যপারে পক্ষপাতমুলকভাবে চুপ থাকি! তারা অারোও বলে অামরা অামেরিকার সাথে বিশাল প্রতিরক্ষা(সামরিক অস্র ক্রয়) চুক্তি করার পরিবর্তে কেনো অারব দেশগুলোতে ইনভেস্টমেন্ট করিনা ও অনুদান দেই না! সৌদি অারবের সম্পদকি অামাদের সম্পদ নয়? কোথায় যায় এগুলো?

📌সৌদি অারব বর্তমানে এবং ইনশাআল্লাহ অদুর ভবিষ্যতেও  অারব ও মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী ও দাতা দেশ।
সম্প্রতি মিশরে  সৌদির সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়গের পরিমান ১০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি! অামরা ইয়েমেন,ফিলিস্তিন,সিরিয়া,জর্ডান,লেবানন,ইরাক,সুদান,তিউনিসিয়া,মরোক্কর,সোমালিয়া এবং সর্বপরি গলফ দেশগুলোত অন্যতম বড় বিনিয়োগকারী। উদাহরণস্বরূপ অারব-অামিরাত ও বাহরাইনে অামারা সবচেয়ে বড় অান্তর্যাতিক বিনিয়োগকারি।

ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক  যা ৫৭ টি মুলসলিম দেশের জন্য অনুদান ও তহবিল গঠন এর কাজ করে, সৌদি অারব এর  স্থপতি ও সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার!

যখনি কোন মুসলিম বা অারব দেশ কোনো দুর্যোগে পতিত হয় বা কোন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সৌদি অারব তখনই ঐসব দেশের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যায়। এবং এই সাহায্য থেকে ইরান এর মতো দেশও বাদ যায় না। সম্প্রতি অামরা ইয়েমেন ১৩ বিলিয়ন ডলারের মানবিক সাহায্য ও  উন্নয়নমূলক সাহায্য দিয়েছি।

অার নিজ দেশে সৌদি ভিশন ২০৩০ কে সামনে রেখে শুধু দেশীয় বেসরকারি ইনভেস্টমেন্ট নয়,শত শত বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ইনভেস্টরসদের অর্থকে কাজে লাগানো হচ্ছে অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন উন্নত শহর ও অত্যাধুনিক শিল্পকারখানা তৈরিতে।

কিন্তু না! অামাদের সম্পদ শুধুমাত্র অামাদের! অাপনারা সমৃদ্ধশালি ছিলেন অামাদের এই উন্নয়নের পুর্বেই, কিন্তু নিজেদের সম্পদ অাপনারা নিজেরা অপচয় করে নষ্ট করে শেষ করেছেন।অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি মাত্র ১% মানুষের হাতে দেশের ৯৯% সম্পদ তুলে দেয়!,এবং বাকি ৯৯% মানুষকে  রাখে বঞ্চিত । অধিকাংশ  অারব দেশগুলো এখনো ব্রিটিশ ও ফ্রান্স ঔপনিবেশিক কালের অবকাঠামো ব্যবহার করে।কথিত বীপ্লবিরা তাদের নিজেদের স্বার্থে সমাজ ও সরকারকে পরিবর্তন করেছে, সংশ্লিষ্ট দেশের জনগনের জন্য নয়।

অামরা অাজ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী কারন অামরা অামাদের সম্পদ অামাদের দেশের জনগনের জন্য ব্যয় করেছি।অামরা  বর্তমানে ও হয়তো ভবিষ্যতেও অাপনাদের সাহায্য করবো। কিন্তু সাহায্য পেতে থেকে অামাদের সম্পদকে নিজেদের সম্পদ মনে করার মনমানসিকতা পরিবর্তন করুন।এগুলো অামাদের সম্পদ!অাপনাদের নয়!

অারবরা ইরানকে সন্ত্রাসী ও অারব দেশগুলোর জন্য হুমকি মনে করে।তারা পরিস্কারভাবে ইরানকে বর্তমানে অারবের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর মনে করে।"ইসলামিক রিপাবলিক " সৌদি অারবের জন্য কোনো সমস্যা নয়,এবং রাজনৈতিক সামঝোতাও সম্ভব। পশ্চিমারা ইরানকে দিয়ে অস্ত্র ব্যবসার জন্য পানি ঘোলা করে অাপনাদের বোকা বানাচ্ছে।

অাচ্ছা ধরুন, অামরা যদি ইরানে মিলিশিয়াদের সাপোর্ট করি এবং তাদের অর্থনৈতিক সাহায্য ও অস্ত্র দিয়ে ইরান সরকারের বীরুদ্ধে উস্কে দেই,তাদেরকে ট্রেনিং দিই,মিসাইল দেই, যাতে করে তারা ইরানের  কুম বা সিরাজ শহরের  শিয়াদের কথিত পবিত্র মাজারগুলোত বোম মারে  বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে  তাহলে কি এই অাগ্রাসনের বীরুদ্ধে তেহরান সহনশীলতা দেখিয়ে ডিপ্লোমেটিক পদ্ধতিতে সমাধান খুজবে?

কিন্তু বাস্তবতা হলো ইরান এর চেয়ে হাজারগুন বেশি করছে। অামাদের ভৌগলিক অবস্থানের চারপাশে চক্রাকারে তারা হুমকি এবং বিভীষিকা ছরিয়ে রেখেছে সিরিয়া,ইরাক,লেবানন ও ইয়েমেনে তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে। অাল-কায়েদা থেকে অাইএসঅাইএস বা দায়িশ, হিজবুল্লাহ থেকে হুথি, সবধরনের শিয়া-সুন্নি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে তারা সাপোর্ট করছে,অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে। তারা মানুষকে একে অন্যের বীরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছে, ক্ষেপিয়ে তুলছে  সরকারের বীরুদ্ধে, তৈরি করছে অস্থিতিশীল পরিবেশ। এমনকি তারা পবিত্র শহর মক্কায় পর্যন্ত মিসাইল মারছে!

অাপনারা কি অাশা করেন অামরা এসবকিছুই সচ্ছ এবং খাটি ডিপ্লোমেটিক পদ্ধতিতে সমাধান করবো? অামরা বিগত ৪০ বছর ধরে এটাই চেষ্টা করে অাসছি,কিন্তু তা কেনো কাজে অাসেনি!

অামরা অামাদের দেশকে রক্ষা করতে অন্য কারোর উপর নির্ভর করতে পারিনা। "নিজের না থাকলে বিপদে পরতে হয়" ওবামার সময় যখন অামেরিকা তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে উদ্যত হয়েছিল তখন অামরা এই ভালো শিক্ষাটি পাই। একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত সেনাবাহিনী অামাদের প্রতিরক্ষা ঢাল। বন্ধুদেশ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা হয়তো তার পরই পাশে থাকবে। তাই অস্ত্র ও প্রযুক্তির জন্য পশ্চিমা বা অন্য কোনো দেশের সাথে অামাদের কুটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে অাপনার যতই অখুশি হোউননা কেনো,অামাদের কিছু করার নেই।

🔘▫সংক্ষেপে, অামরা জানি অামরা কি করছি! অামাদেরকে বুঝতে চেষ্টা করুন!বাকি রইলো অারব দেশগুলো ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো,যারা হারহামেশাই ইচ্ছাকৃত বা ভুল তথ্যের ভিত্তিতে অামাদের বীরুদ্ধচারন করছেন, অাপনারা নিশ্চিত থাকুন যেকোনো পরিস্থিতিতে অামরা অাপনাদের অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক সাহায্য করা থেকে নিজেদেরকে দুরে সরাবো  না,ইনশাআল্লাহ। প্রকৃতপক্ষে অামরা অারব দেশগুলোকে এবং মুসলিম দেশগুলোকে মাজুশি শিয়াদের ইহুদি চক্রান্ত হতে রক্ষা করছি।
তাই অামাদের সাথেই থাকুন,এবং অামাদের জন্য দুয়া করুন!

যদি সৌদি অারবের নিন্দুকদের কথায় অাসি, তাদের প্রোপাগাণ্ডা মেশিন বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষন নেই। সত্যি বলতে, যতোদিন সৌদি অারব এভাবে অর্থনৈতি ও বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারে শীর্ষ পর্যায়ে অবস্থান করবে ততোদিনে নিন্দুকরা তাদের এই প্রোপাগাণ্ডার বন্দুক চালাতেই থাকবে এই অাশায় যে, যেকোনোভাবেই তাদের  ছোরা কোনো বুলেট হয়তো কোনদিন সৌদির কোনো রকেটকে ভূপতিত করবে!

🖍মূলঃ ড. খালেদ এম বাতারফি
(  Assistant Prof. at Alfaisal Univ. Political & Economic Analyst, Writer: Saudi Gazette, Makkah Journal. Twitter  Arabic account: @kbatarfi
Jeddah, Kingdom of Saudi Arabia)

📇অনুবাদঃ ইশতিয়াক অাহমেদ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন